বিপদে পড়লে গাছও কথা বলে!

ছবি সংগৃহীত

 

গাছের যে প্রাণ আছে তা ১২৩ বছরা আগে বাঙালি বিজ্ঞানী জগদীশচন্দ্র বসু আবিষ্কার করেছিলেন। এবার গাছেরা একে অপরের সঙ্গে ‘কথা’ বলে, এই আবিষ্কার করে তাক লাগিয়ে দিলেন জাপানের এক বিজ্ঞানী। তবে মানুষের মতো শব্দে কথা নয়, তাদের মতো করেই সেই যোগাযোগ স্থাপন হয়।

 

সম্প্রতি যা সামনে এসেছে বলা যায় তা জগদীশ বসুর থিওরির উপরই দাঁড়িয়ে। ‘সংবেদনশীল’ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে একটি গাছ আশপাশের কোনো প্রাকৃতিক বদল বা নিজের উপর ঘটা কোনো ঘটনা তার প্রতিবেশী গাছকে জানিয়ে দেয় বলে দাবি করছেন সাইতামা ইউনিভার্সিটির এক গবেষক। গবেষণা বলছে, ‘এয়ারবোর্ন কম্পাউন্ড’ এক্ষেত্রে যোগাযোগের মাধ্যম।

 

জাপানের সাইতামা ইউনিভার্সিটির মলিকিউলার বায়োলজিস্ট মাসাতসুগু টোয়োটা। একদল গবেষককে সঙ্গে নিয়ে তিনি গাছেদের এই কথোপকথন ক্যামেরাবন্দি করেছেন। জার্নাল নেচার কমিউনিকেশন পত্রিকায় তা প্রকাশ হয়েছে। মূলত গাছেরা তাদের পারস্পরিক প্রতিক্রিয়া কীভাবে প্রকাশ করে বা তাদের প্রতিবেশিদের সঙ্গে কীভাবে যোগাযোগ তৈরি করে তারই ছবি ধরা পড়েছে সেখানে।

বিশেষ করে কোনো ‘শত্রু’ সামনে এলে তার হাত থেকে নিজেকে রক্ষার জন্য তৈরি হতে যে প্রক্রিয়ায় গাছেদের নিজেদের মধ্যে যোগসূত্র ও প্রতিক্রিয়া তৈরি হয় তাকেই রেকর্ড করেছেন টয়োটা। এই প্রতিক্রিয়াকে ‘এয়ারবোর্ন অ্যালার্ম’ বা বায়ুবাহিত সতর্কীকরণ বলা যায়।

 

টয়োটা এই প্রক্রিয়া দেখার জন্য দু’টি গাছ নেন। একটি গাছে কিছু পোকার উপদ্রবের ব্যবস্থা করেন। কিছু শুঁয়োপোকা গাছটির পাতায় ছেড়ে দিয়েছিলেন টয়োটা। শুঁয়োপোকা পাতা খেতে শুরু করতেই অন্য একটি গাছে তার প্রভাব পড়তে শুরু করে।

একটি টমোটো গাছের পাতায় শুঁয়োপোকা ছাড়া হয়। পাতাগুলো শুঁয়োপোকা খেতে থাকে। পাশেই ছিল আরাবিডোপসিস থালিয়ানা গাছ। তাতে ক্যালসিয়াম আয়ন ব্যবহার করা হয়। বায়োসেন্সরের ব্যবহারে ধরা পড়ে দুই গাছের কথাবার্তা। টমোটো পাতা থেকে ‘ভোলাটাইল অরগ্যানিক কম্পাউন্ড’ ছড়িয়ে দেয় আরাবিডোপসিসে।

এই ‘কম্পাউন্ডকে’ গ্রহণ করে আরাবিডোপসিস গাছটি বুঝতে পারে যে পাশেরটি আক্রান্ত। যার জেরে সঙ্গে সঙ্গে প্রতিক্রিয়া শুরু হয় এবং তা গাছের গোটা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে শরীরকে সতর্ক করতে শুরু করে। টয়োটার ব্যবহার করা ক্যালসিয়াম আয়নে আরাবিডোপসিসের পাতায় উজ্জ্বল হলুদ সঙ্কেত দিতে থাকে। বায়বীয় যৌগের আদানপ্রদানে এটা হয়।  সূত্র: সাইন্স আর্ট, এনডিটিভি

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» রেলের ভাড়া বাড়ানো অযৌক্তিক ও অমানবিক : গোলাম মোহাম্মদ কাদের

» ছয় দিন ধরে ঝড়বৃষ্টির পূর্বাভাস

» রাজউকের প্লট-ফ্ল্যাট বরাদ্দ নিয়ে নতুন বিধিমালা

» ফিলিস্তিনি প্রতি বাংলাদেশের অকুণ্ঠ সমর্থন রয়েছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

» যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের মাধ্যমে আমরা দায়মুক্ত হয়েছি : মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী

» পরিবেশ বিষয়ক সাংবাদিকতায় হয়রানি হলে সহায়তা দেবে তথ্য মন্ত্রণালয়

» নকল স্যালাইন উৎপাদনকারী একটি চক্রের ৩ সদস্য গ্রেফতার

» ভোটারবিহীন নির্বাচনে আনন্দ নেই, সৌন্দর্য্য নেই: ইসি রাশেদা

» আমি ব্রেকআপ করলাম: সুহানা খান

» লড়াইয়ের সর্বশেষ প্রস্তুতি নিন, নেতাকর্মীদের রিজভী

উপদেষ্টা – মো: মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ,বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি। (দপ্তর সম্পাদক)  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

বিপদে পড়লে গাছও কথা বলে!

ছবি সংগৃহীত

 

গাছের যে প্রাণ আছে তা ১২৩ বছরা আগে বাঙালি বিজ্ঞানী জগদীশচন্দ্র বসু আবিষ্কার করেছিলেন। এবার গাছেরা একে অপরের সঙ্গে ‘কথা’ বলে, এই আবিষ্কার করে তাক লাগিয়ে দিলেন জাপানের এক বিজ্ঞানী। তবে মানুষের মতো শব্দে কথা নয়, তাদের মতো করেই সেই যোগাযোগ স্থাপন হয়।

 

সম্প্রতি যা সামনে এসেছে বলা যায় তা জগদীশ বসুর থিওরির উপরই দাঁড়িয়ে। ‘সংবেদনশীল’ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে একটি গাছ আশপাশের কোনো প্রাকৃতিক বদল বা নিজের উপর ঘটা কোনো ঘটনা তার প্রতিবেশী গাছকে জানিয়ে দেয় বলে দাবি করছেন সাইতামা ইউনিভার্সিটির এক গবেষক। গবেষণা বলছে, ‘এয়ারবোর্ন কম্পাউন্ড’ এক্ষেত্রে যোগাযোগের মাধ্যম।

 

জাপানের সাইতামা ইউনিভার্সিটির মলিকিউলার বায়োলজিস্ট মাসাতসুগু টোয়োটা। একদল গবেষককে সঙ্গে নিয়ে তিনি গাছেদের এই কথোপকথন ক্যামেরাবন্দি করেছেন। জার্নাল নেচার কমিউনিকেশন পত্রিকায় তা প্রকাশ হয়েছে। মূলত গাছেরা তাদের পারস্পরিক প্রতিক্রিয়া কীভাবে প্রকাশ করে বা তাদের প্রতিবেশিদের সঙ্গে কীভাবে যোগাযোগ তৈরি করে তারই ছবি ধরা পড়েছে সেখানে।

বিশেষ করে কোনো ‘শত্রু’ সামনে এলে তার হাত থেকে নিজেকে রক্ষার জন্য তৈরি হতে যে প্রক্রিয়ায় গাছেদের নিজেদের মধ্যে যোগসূত্র ও প্রতিক্রিয়া তৈরি হয় তাকেই রেকর্ড করেছেন টয়োটা। এই প্রতিক্রিয়াকে ‘এয়ারবোর্ন অ্যালার্ম’ বা বায়ুবাহিত সতর্কীকরণ বলা যায়।

 

টয়োটা এই প্রক্রিয়া দেখার জন্য দু’টি গাছ নেন। একটি গাছে কিছু পোকার উপদ্রবের ব্যবস্থা করেন। কিছু শুঁয়োপোকা গাছটির পাতায় ছেড়ে দিয়েছিলেন টয়োটা। শুঁয়োপোকা পাতা খেতে শুরু করতেই অন্য একটি গাছে তার প্রভাব পড়তে শুরু করে।

একটি টমোটো গাছের পাতায় শুঁয়োপোকা ছাড়া হয়। পাতাগুলো শুঁয়োপোকা খেতে থাকে। পাশেই ছিল আরাবিডোপসিস থালিয়ানা গাছ। তাতে ক্যালসিয়াম আয়ন ব্যবহার করা হয়। বায়োসেন্সরের ব্যবহারে ধরা পড়ে দুই গাছের কথাবার্তা। টমোটো পাতা থেকে ‘ভোলাটাইল অরগ্যানিক কম্পাউন্ড’ ছড়িয়ে দেয় আরাবিডোপসিসে।

এই ‘কম্পাউন্ডকে’ গ্রহণ করে আরাবিডোপসিস গাছটি বুঝতে পারে যে পাশেরটি আক্রান্ত। যার জেরে সঙ্গে সঙ্গে প্রতিক্রিয়া শুরু হয় এবং তা গাছের গোটা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে শরীরকে সতর্ক করতে শুরু করে। টয়োটার ব্যবহার করা ক্যালসিয়াম আয়নে আরাবিডোপসিসের পাতায় উজ্জ্বল হলুদ সঙ্কেত দিতে থাকে। বায়বীয় যৌগের আদানপ্রদানে এটা হয়।  সূত্র: সাইন্স আর্ট, এনডিটিভি

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



উপদেষ্টা – মো: মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ,বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি। (দপ্তর সম্পাদক)  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com